ভাগ্য সহায়, হবে তো!
Tushar Siddik
Searching for future: Tushar Siddik |
খুলেই বলি একেবারে শুরু থেকে।
গত ২০১৬ সালে আমি HSC পাশ করি। স্বাভাবিকভাবেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকি। সম্পূর্ণ বাড়িতে, নিজে নিজে। এসব নিয়েও কাহিনী আছে...।
কয়েক জায়গায় ভর্তি পরিক্ষায় অংশ নিলাম। কোথাও চান্স হয়নি। কোথাও তো পাশ নম্বর অবধি আসে নি। একটা জায়গার ভর্তির দরজা খুলতে খুলতেও লেগে গেল। অথচ খাটুনি খেঁটেছি অনেক। ফলাফল হতাশাজনক!
মনে মনে অনেক ভেঙে পড়েছিলাম। কারণ আমার আত্মবিশ্বাস এতটাই ছিল যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছিলাম না। সবশেষে ২য় রিলিজ স্লিপের মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম। মনে একটা আক্ষেপ ছিল মাত্র, এই যা। কেউ যদি জিজ্ঞেস করত, কোথায় ভর্তি হয়েছ, তাহলে কলেজের নাম বলে শুনিয়ে দিতাম যে, এরপর আবার ট্রাই করব। কোথাও না কোথাও চান্স পাবই। মানে আমার তখনো বিশ্বাস হচ্ছিল না যে আমি কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারি নি। যাইহোক, পরের বছর ট্রাই করার প্রত্যাশা রাখলাম।
এক বছর পর পরের বছর এলো। মানে ২০১৭ সাল এলো। বিভিন্ন অভিজ্ঞতা আর বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে ২য় বার ভর্তি পরিক্ষায় অংশ নিব কিনা, দ্বিধাদ্বন্দে ভুগছিলাম। এরমধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি cancel করলাম। আবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আগের তুলনায় ভালো subject এর আশায় আবেদন করলাম। প্রত্যাশিত subject এলো। ভর্তি হয়ে গেলাম। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিক্ষা দেয়ার ইচ্ছা ও আশা একরকম মন থেকে ছেড়ে দিলাম।
আমার কয়েকজন বন্ধুর পিড়াপিড়িতে কখনো মনে হয় পরিক্ষা দেই এবার। শেষ সুযোগ! পরক্ষণেই মনে হয় সারা বছরের কখনোই প্রস্তুতি নেই নি। তো পরিক্ষার হলে বসে কি আঙ্গিল চুষব! সিদ্ধান্ত পাল্টাই। এরমধ্যে ওদের দেয়া confidence এ ভর করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিটে আবেদন করলাম। আমার একজন বন্ধু টাকা পরিশোধ করে দিল। কারণ আমি প্রায় কপর্দক শূণ্য। কিন্তু preparation মোটেই নিচ্ছি না। পরিক্ষার সময় ঘনিয়ে আসতে লাগল। প্রবেশপত্র প্রিন্ট করার জন্য তিন চারবার soft copy নিলাম। প্রতিবার হারিয়ে ফেলি।
পরিক্ষার ১৫-১৬ দিন আগে আমি জলবসন্তে আক্রান্ত হই। বাইরে বের হওয়া পুরোপুরি নিষেধ। ভর্তি পরিক্ষা দেয়ার আশা মন থেকে ছেড়ে দিলাম। পরিক্ষার দুইদিন আগে বাড়ি থেকে বের হওয়ার permission পেলাম। তো অনেকদিন ধরে পড়াতে যেতে পারছি না। ওদের খোঁজ খবর নিলাম।
কথা প্রসঙ্গে বাড়িতে বললাম পরিক্ষার কথা। এতদিন বাসার কেউ জানত না এ ব্যপারে। আমাকে জানানো হলো পরিক্ষা দেয়া লাগবে না। আমি চুপচাপ শুনে গেলাম। পরদিন রাতে আবার পরিক্ষার কথা বললাম। আমাকে বলা হল যে আমার ব্যপারে আমিই ভালো বুঝি। বুঝতে পারলাম, সম্মতি নেই।
কথা প্রসঙ্গে বাড়িতে বললাম পরিক্ষার কথা। এতদিন বাসার কেউ জানত না এ ব্যপারে। আমাকে জানানো হলো পরিক্ষা দেয়া লাগবে না। আমি চুপচাপ শুনে গেলাম। পরদিন রাতে আবার পরিক্ষার কথা বললাম। আমাকে বলা হল যে আমার ব্যপারে আমিই ভালো বুঝি। বুঝতে পারলাম, সম্মতি নেই।
পরিক্ষার দিন, মানে আজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু। সকালে বাসা থেকে বলা হলো ক্লাসে attend করতে। পরিক্ষার কথা আবার বললাম। বিভিন্ন যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে বলা হল পরিক্ষা দেয়া লাগবে না।
মন খারাপ হল। বাসায় বুঝতে দেই নি। preparation নেই, আমি জানি। কিন্তু পরিক্ষা দিব না ভাবতেই মন আরও খারাপ হয়ে গেল।
মন খারাপ হল। বাসায় বুঝতে দেই নি। preparation নেই, আমি জানি। কিন্তু পরিক্ষা দিব না ভাবতেই মন আরও খারাপ হয়ে গেল।
কলেজে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হলাম। এক বন্ধুর বাসায় আমার ব্যাগ ছিল। ওইটা আনার জন্য ওর বাসায় গেলাম। ওর বাসায় গিয়ে বুঝতে পারি যে কলেজে যাওয়ার মোড মন থেকে কর্পূরের মত উবে গেছে। ওর বাসায় সকাল ১০:০০ টা পর্যন্ত থাকি। এরমধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বন্ধু পরিক্ষার ব্যপারে জানতে চাইল। ওকে বললাম যে পরিক্ষা দিতে যাব না। হয়তো একান্ত কাছের বন্ধুটির মন খারাপ হল। কিছুক্ষণ পর আরেকজন বন্ধু ফোন দিয়ে পরিক্ষার কথা জিজ্ঞেস করল। বললাম, যাব না। ওর সাথে অনেকক্ষণ কথা বলার পর যেতে রাজি হলাম।
আমি বাসায় ফেরত এলাম। কাগজপত্র নিলাম। বাবার কাছ থেকে ১০০ টাকা নিলাম এই বলে যে আমি উত্তরা যাচ্ছি। ওই বন্ধুর বাসায় গেলাম।
প্রবেশপত্রেরর soft copy হারিয়ে ফেলেছি। ভাগ্যিস ওর কাছে soft copy ছিল। পেনড্রাইভে নিয়ে বোর্ডবাজার এলাম। প্রিন্ট করলাম। এক ছোট ভাই বলল, আমি 100% sure, আপনি যানজটের জন্য পরিক্ষা দিতে পারবেন না। বলার কারণ আছে বৈকি। আমার পরিক্ষা ১:৫০ এ। আর তখন ১১:০৫ বাজে।
বাসে উঠলাম। ভাগ্যিস রাস্তায় জ্যাম নেই। বাসে সময়মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছানো নিয়ে বিভিন্ন miracles প্রসঙ্গ এলো। বাসা থেকে ফোন আসল। বললাম, উত্তরা যাচ্ছি। ফিরতে দেরী হতে পারে।
প্রবেশপত্রেরর soft copy হারিয়ে ফেলেছি। ভাগ্যিস ওর কাছে soft copy ছিল। পেনড্রাইভে নিয়ে বোর্ডবাজার এলাম। প্রিন্ট করলাম। এক ছোট ভাই বলল, আমি 100% sure, আপনি যানজটের জন্য পরিক্ষা দিতে পারবেন না। বলার কারণ আছে বৈকি। আমার পরিক্ষা ১:৫০ এ। আর তখন ১১:০৫ বাজে।
বাসে উঠলাম। ভাগ্যিস রাস্তায় জ্যাম নেই। বাসে সময়মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছানো নিয়ে বিভিন্ন miracles প্রসঙ্গ এলো। বাসা থেকে ফোন আসল। বললাম, উত্তরা যাচ্ছি। ফিরতে দেরী হতে পারে।
১২:৫০ এ বিশ্ববিদ্যালয়ে এলাম। সব খরচ আমার বন্ধু দিচ্ছে। ১:৫০ এ পরিক্ষা শুরু হওয়ার আগেই হলে ঢুকে রাস্তার পাশে জানালার ধারে বসলাম। পরিক্ষা দিলাম।
হল থেকে বের হওয়ার পর বন্ধু জানতে চাইলে বললাম, প্রশ্ন অনেক easy, খালি এতদিন পড়ি নাই। ছোটভাই ফোন দিল। বললাম, উত্তরা আছি। আমার বন্ধুর পরিক্ষা শুরু হল ৩:১৫ তে। সবশেষে মজা করতে করতে বাড়ি ফিরলাম ৭:০০ টার দিকে। রাত ১০:৫৪ তে বন্ধু ফোন দিয়ে রোল নম্বর দিতে বলল। দিলাম।
কয়েক সেকেন্ড পর ফোন দিয়ে বলল কয়েক বস্তা মিষ্টি নিয়ে আমাদের বাসায় আয়। আমার তো আকাশ থেকে মাটিতে পড়ার অবস্থা! ওরে ধমক দিয়ে বললাম-
-মজা করা বাদ দিয়া কাহিনী ক।
ও জানাল- তুই ১২ তম হইছত।
আমি বললাম- মজা করিস না।
তারপর ও নিশ্চিত হয়ে আবার জানাল।
আমার বাসায় এই মুহুর্তে ইন্টারনেট সার্ভিস নেই। নিশ্চিত হওয়ার জন্য একজন বন্ধুকে ফোন দেই। ফোন ধরে না। আরেকজনকে দিলাম। ওকে বললাম রেজাল্ট দেখতে। ও নাজমুলের মতই বলল। এখন বিশ্বাস হল।
হল থেকে বের হওয়ার পর বন্ধু জানতে চাইলে বললাম, প্রশ্ন অনেক easy, খালি এতদিন পড়ি নাই। ছোটভাই ফোন দিল। বললাম, উত্তরা আছি। আমার বন্ধুর পরিক্ষা শুরু হল ৩:১৫ তে। সবশেষে মজা করতে করতে বাড়ি ফিরলাম ৭:০০ টার দিকে। রাত ১০:৫৪ তে বন্ধু ফোন দিয়ে রোল নম্বর দিতে বলল। দিলাম।
কয়েক সেকেন্ড পর ফোন দিয়ে বলল কয়েক বস্তা মিষ্টি নিয়ে আমাদের বাসায় আয়। আমার তো আকাশ থেকে মাটিতে পড়ার অবস্থা! ওরে ধমক দিয়ে বললাম-
-মজা করা বাদ দিয়া কাহিনী ক।
ও জানাল- তুই ১২ তম হইছত।
আমি বললাম- মজা করিস না।
তারপর ও নিশ্চিত হয়ে আবার জানাল।
আমার বাসায় এই মুহুর্তে ইন্টারনেট সার্ভিস নেই। নিশ্চিত হওয়ার জন্য একজন বন্ধুকে ফোন দেই। ফোন ধরে না। আরেকজনকে দিলাম। ওকে বললাম রেজাল্ট দেখতে। ও নাজমুলের মতই বলল। এখন বিশ্বাস হল।
সবশেষে উপসংহার এই যে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরিক্ষায় ভাগ্য সহায় থাকা চাই!!!
No comments:
Post a Comment