৫০০ বছরের রহস্যভেদঃ বাবরি মসজিদ
Babri Mosque |
মসজিদটি সূক্ষ্ম নির্মাণকৌশলের নিদর্শন বহন করে। মুঘলদের স্থাপত্য 'তুঘলক' রাজবংশের স্থাপত্যের প্রভাব বহন করে যার একটি স্বতন্ত্র গঠনশৈলী আছে। তাদের মসজিদ নির্মাণে আঞ্চলিক বা প্রাদেশিক জলবায়ু, ভূখণ্ড, উপকরণ ইত্যাদি প্রভাব ফেলতো যার ফলে বঙ্গ, কাশ্মীর ও গুজরাটের মসজিদের মধ্যে বিরাট পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। মসজিদগুলি শুধুমাত্র স্থানীয় মন্দির বা গার্হস্থ্য গঠনশৈলীর মধ্যে আবদ্ধ ছিল না। বাবরি মসজিদ জানপুরের সুলতানি স্থাপত্যের পরিচয় বহন করে। বাবরি মসজিদ তার সংরক্ষিত স্থাপত্য ও স্বতন্ত্র গঠনশৈলীর জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মসজিদটি সম্রাট আকবর দ্বারা গৃহীত ইন্দো-ইসলামী গঠনশৈলীর প্রতীক ছিল। লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংক (১৮২৮-১৮৩৩) এর সময়কার স্থপতি গ্রাহাম পিকফোর্ড বলেন, "বাবরি মসজিদের মেহরাবে ফিসফিস শব্দ হলেও তা ২০০ ফুট দূরত্বের অন্য প্রান্ত হতেও পরিস্কারভাবে বোঝা যায়।“
ফৈজাবাদ জেলার ১৯০৫ সালের গ্যাজেটিয়ার অনুযায়ী, ১৮৫২ সাল পর্যন্ত হিন্দু এবং মুসলমান, দুই সম্প্রদায়ই সংশ্লিষ্ট ভবনটিতে প্রার্থনা ও পূজা করেছে৷
Babri Mosque with police guard |
১৮৫৩ সালে প্রথম এই ইস্যুতে বিরোধ বাঁধে। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী অযোধ্যা হল রামের জন্মভূমি। কিছু হিন্দুর কাছে মসজিদটির নির্মাণস্থান 'রাম জন্মভূমি' বলে অভিহিত হয়ে থাকে। একটি প্রাচীনতর রাম মন্দির বিনষ্ট করে তার জায়গায় মীর বাকি মসজিদটি নির্মাণ করেন বলে হিন্দুদের দাবি৷
১৮৫৯ সালে ব্রিটিশ সরকার দেয়াল দিয়ে হিন্দু আর মুসলমানদের প্রার্থনার স্থান আলাদা করে দেয়৷
১৮৮৫ সালে ফৈজাবাদ জেলা আদালতে বাবরি মসজিদের বাইরে চাঁদোয় টাঙানোর আবেদন জানালেন মহান্ত রঘুবর দাস। আদালতে আবেদন নাকচ হয়ে যায়। ফলে আলাদা পার্টিশনেই ৯০ বছর ধরে প্রার্থনা চলছিল।
১৯৪৯ সালের ২৩শে ডিসেম্বর হিন্দু মহাসভার সদস্যরা বে-আইনী ভাবে বাবরি মসজিদের অভ্যন্তরে রাম-সীতার মূর্তি স্থাপন করে৷ এতে দুই পক্ষে প্রচুর উত্তেজনা তৈরি হয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে মসজিদটিকে বিতর্কের বিষয় বলে অভিহিত করে সরকার এবং মসজিদের দরজায় তালা লাগানো হয়। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জওহরলাল নেহরু এবং উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন গোবিন্দ বল্লভ পন্থ।
১৯৫০ এ রাম-সীতার মূর্তিগুলির পূজার অধিকারের আবেদন জানিয়ে ফৈজাবাদ জেলা আদালতে আবেদন করেন গোপাল শিমলা বিশারদ। একই বছরে মূর্তি রেখে দেওয়ার এবং পূজা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করেন পরমহংস রামচন্দ্র দাস।
১৯৫৯ সালে ওই স্থানের অধিকার চেয়ে মামলা করে নির্মোহী আখড়া।
তারপর ১৯৬১ সালে সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডও ওই স্থানের অধিকার চেয়ে মামলা করে।
১৯৮৪ তে রাম মন্দির গড়ার দাবি নিয়ে হিন্দুদের একটি কমিটি তৈরি হয়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) তাদের রাজনৈতিক সহযোগী ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) সাথে নিয়ে ঐ স্থানে রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচারাভিযান চালায়। মসজিদের তালা খুলে সেখানে পূজা করার অনুমতি প্রার্থনা করে হিন্দু পরিষদ৷
১৯৮৬ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি একটি জেলা জজ আদালত নির্দেশ দেন দরজার তালা খোলার এবং ঐ স্থানে হিন্দুদের প্রার্থনা করার পক্ষে রায় দেন। আদালতের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানান ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রাজনীতিবিদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। কারণ তিনি শাহ-বানো বিতর্কের দরুন গোঁড়া হিন্দুদের সমর্থন হারানোর পর পুনরায় গোঁড়া হিন্দুদের সমর্থন লাভে উদ্যত হয়েছিলেন।
১৯৮৯ সালের নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের আগে ভিএইচপি বিতর্কিত স্থলটিতে (মন্দিরের) ‘ভিত্তিপ্রস্তরের'-এর অনুমতি পায়৷ ১৪ই আগস্ট এলাহাবাদ হাইকোর্ট বিতর্কিত স্থানে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন।
১৯৯০ এর ২৫শে ডিসেম্বরে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানি গুজরাটের সোমনাথ থেকে জনমত তৈরির উদ্দেশ্যে দশ হাজার কিলোমিটার দূরত্বের 'রাম রথযাত্রা' শুরু করেন। রথযাত্রাটি গোটা উত্তর ভারত ঘুরে অযোধ্যায় আসে। এই রথযাত্রা প্রস্তাবিত মন্দিরের জন্য সমর্থন আনার জন্য এবং মুসলিমবিরোধী মানসিকতাকে কাজে লাগিয়ে হিন্দু ভোটগুলোকে একটি দলের বাক্সে আনার পক্ষে কাজ করেছিল। অযোধ্যায় পৌঁছানোর পূর্বে বিহার প্রাদেশিক সরকার আদবানিকে গ্রেফতার করে। তা সত্ত্বেও, বহু করসেবক বা সংঘ পরিবার কর্মী অযোধ্যায় পৌঁছেছিল এবং মসজিদটি আক্রমণ করতে চেষ্টা করেছিল। ফলশ্রুতিতে, আধাসামরিক বাহিনীর সাথে তারা পূর্বপরিকল্পিত সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষের ফলে কিছু করসেবক নিহত হন। এরপর, বিজেপি নতুন নির্বাচনের দাবি জানায় এবং ভি. পি. সিং সরকার থেকে তাদের সমর্থন তুলে নেয়। এরপর, বিজেপির লোকসভা আসন সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং তারা উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো ঐ বিতর্কিত স্থানে এক শোভাযাত্রার আয়োজন করে। শোভাযাত্রায় শামিল হয়েছিল দেড় লাখ ভিএইচপি এবং বিজেপি "কর সেবক"। এছাড়া, অনুষ্ঠানে আদবানি, মুরলি মনোহর জোশি ও উমা ভারতীর মত বিজেপি নেতা ভাষণ দিয়েছিলেন। শোভাযাত্রা চলাকালীন সময়ের প্রথম দিকে জনতা ক্লান্তিহীনভাবে স্লোগান দিচ্ছিল। সহিংসতা প্রতিরোধে স্থাপনাটির চারদিকে পুলিশি বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছিল। দুপুরের দিকে এক যুবক (বলবীর সিং, পরবর্তীতে মুসলিম হওয়ার পর তার নাম রাখা হয় মোহাম্মদ আমির) বেষ্টনী অতিক্রম করে স্থাপনাটির উপরে চলে যায় এবং গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করে। এটা ছিল সহিংসতার আগমনবার্তা। এরপর, উন্মত্ত জনতার সামনে পুলিশি বেষ্টনী বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে নি। শিব সেনা আর বিজেপি নেতাদের আহ্বানে প্রায় দেড় লাখ মানুষ বাবরি মসজিদে হামলা চালায়৷ তারা কুঠার, হাতুড়ি এবং গাইতি দিয়ে ইমারতটি ভাঙা শুরু করে। কয়েক ঘণ্টার মাঝে কাদা ও চুনাপাথর দ্বারা নির্মিত ইমারতটি মাটির সাথে মিশে যায়। দেশ জুড়ে দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরি হয়। কয়েকমাস সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয়। এতে ভারতে প্রায় ২০০০ জন মানুষের প্রাণহানী ঘটে (অধিকাংশই মুসলিম) ও প্রায় ৩৬০ কোটি মার্কিন ডলার সমমূল্যের সম্পদ নষ্ট হয়। পাকিস্তান, বাংলাদেশসহ মুসলিম দেশগুলোতেও এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।
ধারণা করা হয়, বাবরি মসজিদ ধ্বংসযজ্ঞ ১৯৯৩ সালে বোম্বে বোমা হামলা এবং পরবর্তী সময়কালে সম্পন্ন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটনের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রেখেছিল। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো তাদের সন্ত্রাসী হামলাগুলোর কারণ হিসেবে বাবরি মসজিদ ধ্বংসকে উল্লেখ করেছিল।
Babri Mosque; under attack |
১৯৯২ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখে কেন্দ্রীয় সরকার মসজিদ ধ্বংসের বিষয়টি তদন্ত করার জব্য অবসরপ্রাপ্ত উচ্চ আদালত বিচারক মনমোহন সিং লিবারহানের নেতৃত্বে লিবারহান কমিশন গঠন করে। ১৬ বছরে ৩৯৯ বার বৈঠকের পর ২০০৯ সালের ৩০শে জুন লিবারহান কমিশন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১,০২৯ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন অনুসারে ১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বরের ঘটনা অপ্ররোচিত কিংবা অপরিকল্পিত" ছিল না।
৩রা এপ্রিল ১৯৯৩ এ অযোধ্যার জমি অধিগ্রহণ করার জন্য বিতর্কিত এলাকার অধিগ্রহণ আইন পাস হয়। এলাহাবাদ হাইকোর্টে এই আইনের বিভিন্ন বিষয়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রিট পিটিশন জমা পড়ে। সংবিধানের ১৩৯ এ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে ওই রিট পিটিশন বদলি করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
১৯৯৪ এর ২৪ শে এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক ইসমাইল ফারুকি মামলার রায়ে জানায়, মসজিদটি ইসলামের অন্তর্গত ছিল না।
২০০২ এর এপ্রিলে বিতর্কিত স্থানের মালিকানা নিয়ে হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়।
ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী দু’পক্ষের সমঝোতার জন্য বিশেষ সেল গঠন করেন৷ বলিউডের সাবেক অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহাকে হিন্দু ও মুসলমানদের নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করার দায়িত্ব দেয়া হয়৷ আদালতের আদেশ অনুযায়ী ২০০৩ সালের ১২ই মার্চ থেকে ৭ই আগস্ট পর্যন্ত Archaeological Survey of India (ASI) স্থানটি পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা করে। ASI তাদের রিপোর্টে জানায় যে মসজিদের নিচে ১০ম শতাব্দীর অনৈসলামিক স্থাপত্যের নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। তাদের রিপোর্ট থেকে আরও জানা যায়, ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে অযোধ্যায় মানবকার্যাবলী হচ্ছে। এখানে ২১০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের শুঙ্গ ও কুশন আমলের জনবসতিরও চিহ্ন রয়েছে। সফদার হাশমি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট (Sahmat) ASI এর এ রিপোর্টের সমালোচনা করেছিল। Sahmat এর দাবী, ASI মাটির নিচে যে চুন-শুরকি পেয়েছে, তা মুসলিমদের অস্তিত্বই নির্দেশ করে। পরবর্তীতে রায় দেয়ার সময় আদালত ASI এর রিপোর্টকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেন।
২০০৩
- ১৩ই মার্চ, সুপ্রিম কোর্ট বলেন, অধিগৃহীত জমিতে কোনও রকমের ধর্মীয় কার্যকলাপ চলবে না।
- ১৪ই মার্চ সুপ্রিম কোর্ট বলেন, এলাহাবাদ হাইকোর্টে দেওয়ানি মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য অন্তর্বর্তী আদেশ কার্যকর থাকবে।
- ওই বছরই এই মামলার জন্য আদালত সাতজন হিন্দু নেতাকে তলব করে। তার মধ্যে বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতাও ছিলেন। লখনউতে মুরলী মনোহর যোশী, উমা ভারতীর বিরুদ্ধে মামলা চলে।
- জুলাই মাসে ডেডলাইন দিয়ে দেওয়া হয়, যাতে ৯ মাসের মধ্যে এই মামলার রায় ঘোষণা হয়।
Allahabad High Court, India |
২০১১ সালের ৯ মে হিন্দু ও মুসলমানদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের সেই রায় বাতিল করে৷ দুই বিচারপতির বেঞ্চ বলেন, বাদী বিবাদী কোনো পক্ষই জমিটি ভাগ করতে চান না৷
২৬শে ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তে বিতর্কিত স্থানে রাম মন্দির তৈরির অনুমতি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী।
২০১৭
- ২১শে মার্চ, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জেএস খেহর যুযুধান পক্ষগুলিকে আদালতের বাইরে সমঝোতার প্রস্তাব দেন।
- ৭ই আগস্ট এলাহাবাদ হাইকোর্টের ১৯৯৪ সালের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে করা আবেদনের শুনানির জন্য তিন বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করে সুপ্রিম কোর্ট।
- ৮ই আগস্টে উত্তর প্রদেশের শিয়া সেন্ট্রাল বোর্ড সুপ্রিম কোর্টে জানায়, বিতর্কিত স্থান থেকে কিছুটা দূরে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় মসজিদ বানানো যেতে পারে।
- ১১ই সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নির্দেশ দেয়, বিতর্কিত জমির ব্যাপারে সদর্থক মধ্যস্থতার জন্য দু’জন অতিরিক্ত জেলা বিচারককে ১০ দিনের মধ্যে মনোনয়ন করতে হবে।
- ২০শে নভেম্বরে উত্তর প্রদেশের সিয়া সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড সুপ্রিম কোর্টকে বলে, অযোধ্যায় মন্দির ও লখনউয়ে মসজিদ বানানো যেতে পারে।
- ১লা ডিসেম্বর, এলাহাবাদ হাইকোর্টে ২০১০ সালের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবেদন করেন ৩২ জন নাগরিক অধিকার রক্ষা কর্মী।
২০১৮
- ৮ই ফেব্রুয়ারি, সুপ্রিম কোর্টে সমস্ত দেওয়ানি মামলার আবেদনের শুনানি শুরু হয়।
- ১৪ই মার্চ, সুব্রহ্মণ্যম স্বামী সহ সকল অন্তর্বর্তী আবেদন (যারা এই মামলার পক্ষ হতে চেয়েছিল) নাকচ করে সুপ্রিম কোর্ট।
- ৬ই এপ্রিল, ১৯৯৪সালের রায়ে যে পর্যবেক্ষণ ছিল তা বৃহত্তর বেঞ্চে পুনর্বিবেচনা করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানালেন রাজীব ধাওয়ান।
- ২০শে জুলাই, সুপ্রিম কোর্ট রায়দান স্থগিত রাখল।
- ২৭শে সেপ্টেম্বর, পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে মামলা নিয়ে যেতে অস্বীকার করল সুপ্রিম কোর্ট। জানানো হল, ২৯শে অক্টোবর থেকে মামলার শুনানি হবে নবগঠিত তিন বিচারপতির বেঞ্চে।
- ২৯শে অক্টোবর, সুপ্রিম কোর্ট জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে যথাযথ বেঞ্চে মামলার শুনানি স্থির করল, ওই বেঞ্চই শুনানির দিন ধার্য করবে।
- ২৪শে ডিসেম্বর, সুপ্রিম কোর্ট সিদ্ধান্ত নিল, এ সম্পর্কিত সমস্ত আবেদনের শুনানি হবে ৪ঠা জানুয়ারি, ২০১৯ থেকে।
The Supreme Court of India |
২০১৯
- ৪ঠা জানুয়ারি, সুপ্রিম কোর্ট জানায়, তাদের তৈরি করা যথোপযুক্ত বেঞ্চ মামলার শুনানির তারিখ ১০ জানুয়ারি স্থির করবে।
- ৮ই জানুয়ারি, সুপ্রিম কোর্ট পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ ঘোষণা করে। শীর্ষে রাখা হয় প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে। এ ছাড়া বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন এস এ বোবদে, এনভি রামানা, ইউইউ ললিত এবং ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
- ১০শে জানুয়ারি, বিচারপতি ইউইউ ললিত নিজেকে মামলা থেকে সরিয়ে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে বলেন, ২৯শে জানুয়ারি নতুন বেঞ্চের সামনে মামলার শুনানি শুরু করতে।
- ২৫শে জানুয়ারি, সুপ্রিম কোর্ট পাঁচ সদস্যের নতুন সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করে। নতুন বেঞ্চের সদস্যরা হলেন বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এসএ বোবদে, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ এবং এস এ নাজির। (এই বেঞ্চই ৯ নভেম্বর, ২০১৯ তারিখে চূড়ান্ত রায় দেন)।
- ২৯শে জানুয়ারি, কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে বিতর্কিত অংশ বাদ দিয়ে বাকি ৬৭ একর জমি তাদের আদত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেবার আবেদন জানায়।
- ২০শে ফেব্রুয়ারি, সুপ্রিম কোর্ট জানায়, মামলার শুনানি শুরু হবে ২৬শে ফেব্রুয়ারি থেকে।
- ২৬শে ফেব্রুয়ারি, সুপ্রিম কোর্ট মধ্যস্থতার কথা বলে। আদালত নিযুক্ত মধ্যস্থতাকারীদের কাজে লাগানো হবে কিনা সে সিদ্ধান্ত নেবার জন্য ৫ই মার্চ দিন স্থির হয়।
- ৫ই মার্চ, জমি বিতর্ক মধ্যস্থতার মাধ্যমে মীমাংসা করা হবে কিনা সে সম্পর্কিত রায় দান মুলতুবি রাখে সুপ্রিম কোর্ট।
- ৯ই এপ্রিল, নির্মোহী আখড়া কেন্দ্রের জমি ফেরানোর আবেদনের বিরোধিতা করে।
- ৯ই মে, তিন সদস্যের মধ্যস্থতাকারী কমিটি সুপ্রিম কোর্টে তাদের অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা দেয়।
- ১৮ই জুলাই, সুপ্রিম কোর্ট মধ্যস্থতা চালিয়ে যেতে বলে, ১লা আগস্ট রিপোর্ট জমা দেওয়ার দিন ধার্য হয়।
- ১লা আগস্ট, মধ্যস্থতা সংক্রান্ত রিপোর্ট বন্ধ খামে সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়ে।
- ৬ই আগস্ট, সুপ্রিম কোর্ট জমি মামলায় দৈনিক ভিত্তিতে শুনানির কথা জানায়।
- ১৬ই অক্টোবর, সুপ্রিম কোর্টে শুনানি শেষ হয়, রায়দান মুলতুবি রাখা হয়।
- ৯ই নভেম্বর, অযোধ্যা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের সারকথাঃ রামলালা সম্পূর্ণ জমি পাবে। অযোধ্যার অন্য কোথাও সুন্নী ওয়াকফ বোর্ডকে ৫ একর জমি দেওয়া হবে মসজিদ নির্মাণের জন্য।
Tushar Siddik
Department of Economics (47th batch),
Jahangirnagar University,
Savar, Dhaka-1342
No comments:
Post a Comment